এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে কর্মহীন হয়েপড়া নিন্ম আয়ের মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ ঈদ উপহার হিসেবে প্রতিজনকে ২৫০০ টাকা করে প্রদানের সিদ্বান্ত নিয়েছেন। উপহারের এই টাকা বিতরণের তালিকা তৈরিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অনিয়ম স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠলেও কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার দুই ইউপি চেয়ারম্যান এই ক্ষেত্রে সৎ সাহস দেখিয়েছেন। তাঁরা ইউনিয়ন পরিষদের নোটিশ বোর্ডে উপকারভোগী কর্মহীন হয়েপড়া নিন্ম আয়ের মানুষের তালিকা টাঙ্গিয়ে দিয়ে রীতিমত নজির স্থাপন করেছেন।
চকরিয়া উপজেলার দুই ইউপি চেয়ারম্যান সবার আগে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের তালিকা তৈরীতে সৎ সাহস দেখিয়েছেন। তালিকায় যাদেরকে উপকারভোগী নির্বাচিত করা হয়েছে তাদের নাম ইতোমধ্যে পরিষদের নোটিশ বোর্ডে টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে। তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে অনন্য নজির স্থাপন করা চেয়ারম্যানরা হলেন চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম ও চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ জসীম উদ্দিন।
অবশ্য এরআগে সোমবার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নগদ টাকার তালিকা প্রকাশের ঘোষণা দিয়ে রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান সাংবাদিক আবদুল মাবুদ ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে দিয়েছেন।
চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের নোটিশ বোর্ডে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের টাকার তালিকা প্রকাশ করেছেন চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি এবং আমার পরিষদ সম্পূর্ণ দূর্নীতিমুক্ত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কর্মহীন মানুষের মাঝে নগদ টাকা উপহারের তালিকা যথাযথভাবে করা হয়েছে। তালিকাটি ইউনিয়নবাসী যাতে সচক্ষে দেখতে পায় তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সরকারী সকল সুযোগসুবিধা আমার ইউনিয়নে বিতরণের সুস্পষ্ট হিসেব আমার কাছে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন আরও বলেন, উক্ত তালিকায় যাহারা বাদ পড়ছে, তাহাদেরকে সম-পরিমাণ সুবিধা সম্পন্ন অন্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তাছাড়া ১০ টাকা মূল্যে ৩০ কেজি চাউল ৫১৪ জন এবং ৩০ কেজি করে ভিজিডি চাউল ৮০ জন উপকারভোগীদের মাঝে প্রতি মাসে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া ইতোমধ্যে করোনার কারণে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত ৮.১৬ মে.টন চাউল উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আজিমুল হক আজিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরীব মানুষের জন্য ঈদ উপহার দিচ্ছেন। সেখানে তালিকা তৈরীতে অনিয়ম বা স্বজনপ্রীতি হবে সেটি দায়িত্বশীল জনপ্রতিনিধির কাম্য নয়। তাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অংশহিসেবে নির্বাচিত উপকারভোগী কর্মহীন হয়েপড়া নিন্ম আয়ের মানুষের তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করেছি। তালিকার কপি ইউনিয়ন পরিষদের নোটিশ বোর্ডে টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সব জনপ্রতিনিধি দুর্নীতিবাজ নন দাবি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে মোট ৪৫৭১ জন চেয়ারম্যান ও ৫৪,৮৫২ জন মেম্বার রয়েছে। তার মধ্যে কি সবাই অনিয়মে জড়িত। একটি সত্য কথা হলো, পরিষদের সবধরণের ত্রাণ সহায়তা বিতরণের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের লোকজন একসাথে কাজ করে। সেইজন্য বলবো দেশের সব জনপ্রতিনিধিদেরকে লাগামহীনভাবে দোষী সাব্যস্ত করা যাবেনা। আগে সত্যতা যাচাই করতে হবে। তারপর অপবাধ।
আজিমুল হক আজিম বলেন, আমি ১৮ বছর যাবত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছি। কাজ করার সময় ভুল করতে পারি তবে পরিষদের বা সরকারি কোন বরাদ্দ আত্মসাৎ করিনি, ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতেও এই ধরণের কাজ আমি করবো না। #
পাঠকের মতামত: